সুজিত দাস




দ্য সেলফিস জায়ান্ট

হিরোসিমায় যখন বোমা নেমে এল 'এনোলা গে' থেকে, আমি তখন গরীব সেজে লিফট্‌-এ উঠলাম। নবম তলে নিজেকে দরিদ্র সাজিয়ে পেশ করলাম। ভবিষ্যতের কথা ভেবে। ভুলে গেলাম সেইসব বন্ধুদের মুখশ্রী, যারা আমার ক্লাউড নাইন এবং তার একাঙ্ক নাটকের ইতিহাস মুখস্ত করে রেখেছে। সব মেজ সেজ সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি গিলে নিলাম কন্ঠনালী বরাবর। এভাবে গিলে ফেলতে ফেলতে একদিন হাওড়া ব্রিজ গিলে ফেললাম। বৈঠকখানা বাজার গিলে ফেললাম। নতুন ছেপে আসা বইয়ের মলাটও গিলে ফেললাম। এগারোটার বেশী ফোন ধরব না বলে, একদিন আস্ত এক দামি সেলফোনও গিলে ফেললাম। এরপর বইমেলা গিলে ফেললাম। পুরস্কার গিলে ফেললাম। একদিন শখ করে একটা উড়োজাহাজও গিলে ফেললাম। উড়ন্ত সব এয়ারহোস্টেসদের বিষাদ এবং লিবিডোর কথা, হ্যাঁ, গিলে ফেললাম তাও। সে এক অশৈলী ব্যাপার। তবু আমি গিলে ফেলার অভ্যেস ছাড়ি নি। এমনকী প্রিয় বন্ধুর দীর্ঘ কবিতা(ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার্স অফ সলিচিউড) গিলে ফেলার জন্য পুরনো অ্যালবাম থেকে একের পর এক দরবারি কানাড়ার ছবি নিয়ে এসে কপি পেস্ট করে দিলাম ইথার তরঙ্গে। নিজেকে এত ইন্সিকিওর্ড দেখি নি আগে। নাগাসাকির মানুষেরা পুড়ে যেতে যেতেও এতটা ঢ্যামনামি করে নি। প্রভু, একখানি শিরদাঁড়া দাও আমাকে। তফাৎ যাই। এইসব মধ্যচল্লিশ দুপুরবিলাসী লাইকের হাত থেকে, মহাকাশচারী লাইকার হাত থেকে রক্ষা কর, রাধামাধব। নইলে কবিতার বদলে কৈফিয়ত পোস্ট করতে করতে নিঃস্ব হয়ে যাব একদিন, দেখো।

আপাতত, যেকোনো বাতকর্মের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হ্যাশট্যাগসহ দশলাইন লেখার শক্তি দাও, দয়াময়।
সেলফি তোলারও।


8 comments:

  1. একটা জোরে ও জোরালো হয়ে, নিজেকে টেনে রাখতে হচ্ছিল। একবার, দুবার ও আরও কিছুবার পড়লাম

    ReplyDelete
  2. অসহ্য রকমের বীভৎস ধরনের সুন্দর। সৌরজগত জুড়ে ঘুড়ে চলছে,চলুক এই কবিতা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমাকে একটু কবিতাটা বুঝিয়ে দেবেন প্লিজ। আমি কিচ্ছু বুঝতে পারলাম না।

      Delete
  3. It was awesome..#sujit das.. Joy Guru..

    ReplyDelete
  4. কাঁটা কাঁটা সত্যি।

    ReplyDelete